সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

অনন্ত -মিথিলা



মিথিলা

আবুল হোসেন খোকন


অনন্ত, মেহিদি পাতা দেখেছ নিশ্চয়?
উপরে সবুজ, ভেতরে রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত-
নিজেকে আজকাল বড় বেশি মেহেদি পাতার মতো,
মনে হয় কেন?


উপরে আমি অথচ ভিতরে কষ্টের যন্ত্রনার-
এমন সব বড় বড় গর্ত যে-
তার সামনে দাড়াতে নিজেরী ভয় হয়, অনন্ত।
তুমি কেমন আছো?
বিরক্ত হচ্ছ না তো?


ভালোবাসা যে মানুষকে অসহায়ও করে তুলতে পারে-
সেদিন তোমায় দেখার আগ পর্যন্ত-
আমার জানা ছিলো না।
তোমার উদ্দাম ভালোবাসার দূতি-
জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে ফেলেছে আমার ভিতর-
আমার বাহির-
আমার হাতে গড়া আমার পৃথিবী।


অনন্ত, যেই মিথিলা শুখী হবে বলে-
ভালোবাসার পূর্ণ চঁন্দ গিলে খেয়ে-
ভেজা মেঘের মতো উড়তে উড়তে চলে গেল,
আজ অন্য শূন্য, অনন্তকে আরো শূন্য করে দিয়ে-
তার মুখে এসব কথা মানায় না,
আমি জানি-
কিন্তু আমি আর এভাবে এমন করে পারছি না
আমার চারদিকের দেয়াল জুড়ে থই থই করে-
আমার স্বপ্ন খুনের রক্ত।


উদাস দুপুরে বাতাসে শিষ দেয়
তোমার সেই ভালোবাসা
পায়ে পায়ে ঘুরে ফেরে ছায়ার মতোন-
তোমার স্বৃতি।
আমি আগলাতেও পারি না,
আমি ফেলতেও পারি না।
শুখী হতে চেয়ে এখন দাড়িয়ে আমি-
একলা আমি-
কষ্টের তুষার পাহারে।


অনন্ত তোমার সামনে দাড়ানোর কোন –
যোগ্যতাই আজ আমার অবশিষ্ট নেই।
তবুও,
তবুও তুমি একদিন বলেছিলে-
ভেজা মেঘের মতো-
অবুজ আকাশে উড়তে উড়তে-
জীবনের সুতোয় যদি টান পরে কখনো?
চলে এসো, চলে এসো-
বুক পেতে দেব-আকাশ বানাবো
আর হাসনা হেনা ফুটাবো।


সুতোয় আমার টান পরেছে অনন্ত,
তাই আজ আমার সবকিছু,
আমার এক রোখা জেদ,
তুমি হীনা শুখী অনেক স্বপ্ন!
সব, সবকিছু জলাঞ্জলী দিয়ে-
তোমার সামনে আমি নত জানু-
আমায় তোমাকে আর একবার ভিক্ষে দাও।
কথা দিচ্ছি- তোমার অমর্যাদা হবে না কোনদিন।


অনন্ত, আমি জানি-
এখন তুমি একলা পাষান কষ্ট নিয়ে ঘুরে বেড়াও,
প্রচন্ড এক অভিমানে-
ক্ষনে ক্ষনে গর্জে উঠে অগ্নিগিরি।
কেউ জানে না, আমি জানি-
কেন তোমার মনের মাঝে মন থাকে না,
ঘরের মাঝে ঘর থাকে না,
উঠোন জোরার উপর কলস-
তুলসি তলের ঝড়া পাতা,
কুয়ো তলার শূন্য বালতি-
বাসন-কোসন, পূর্নিমা-অমাবর্ষা,
একলা ঘরে এই অনন্ত-
একা শুয়ে থাকা।
কেউ জানে না, আমি জানি-
কেন তুমি এমন করে কষ্ট পেলে-
সব হরিয়ে বুকের তলের চিতানলে-
কেন তুমি নষ্ট হলে?
কার বিহনে চুপি চুপি, ধীরে ধীরে-
কেউ জানে না, আমি জানি-
আমিই জানি।


আগামি শনিবার ভোরের ট্রেনে তোমার কাছে আসছি।
অনন্ত, আমার আর কিছু না দাও- অন্তত শাস্তিটুকু দিও।
ভালো থেকো!
তোমারি হারিয়ে যাওয়া মিথিলা।

............................................................................................................
আমার মতো বেওয়ারিস একটা পথের কাঙ্গালের সাথে
ঘর বেধে শুধু শুধু নষ্ট হতো তোমার জীবন
বরং এইতো ভাল
এখন তুমি --- সুখে আছো তো মিথিলা ?
.....হ্যা সুখে আছি
ভয়াবহ ভাবে সুখে আছি

অনন্ত, ভুল সুখ, ভুল আভিজাত্য, আর ভুল পুর্নতা
আমায় তাড়া করতে করতে
যেদিন দেয়ালে নিয়ে ঠেকালো
যেদিন দেখলাম আর পথ নেই আমার পথ চলবার
সেদিন ই তার সাথে আমার সম্পর্ক চুকে গেছে

অনন্ত , আর কিছু জানতে চেয়ো না
কি নিষ্ঠুর এ খেলা
তাই না অনন্ত ?

কাল রাতে , কেন যেন বার বার মনে হয়েছে তুমিই অনন্ত, কিন্তু...
আচ্ছা, তমি কেন নিজেকে লুকোলে ?
ভয়ে....
কিসের ? ....
একাকিত্বের শান্তিতে বিঘ্ন ঘটার ।

তুমিই বা কেন পরিচয় গোপন করলে ?
ঐ একই কারনে ......
আচ্ছা, শুনেছিলাম তুমি বাইরে সেট্‌ল করেছ
এলে কবে ?
এই ...... অল্প কিছুদিন ....

এই - একটা কবিতা বলো না ---

যো হুকুম ....

ও সোনা বৌ
আবার একবার আয়না দেখি কেমন পারিস
দুঃখের শিকল ছিড়ে ফেলে
সিংহাসনের মোহ ভুলে
পলকে তোর চোখ সাগরে ঝাপিয়ে পড়ি
কেমন দেখিস ..... ও সোনা বৌ
আবার একবার আয়না দেখি কেমন পারিস

এই যে এখন এই আঙ্গিনায়
হাসনা হেনায় লেগে গেলো চাঁদের আগুন
চোখের জলের বইছে নদী, ভুলের বোঝা বাড়ে দ্বিগুন
উথাল পাথাল জোছনা রাতে তোর অভাবে
এই আভাবীর নেই চোখে ঘুম

এমনি সময় জোছনা বরং ঘোমটা তুলে
রুনুঝুনু নূপুর পায়ে হৃদয় পাতা পথ মাড়িয়ে
ও সোনা বৌ, সেই যুবকের পাসটি ছেড়ে আয়না শ্যামা
কেন এমন যত্ন করে কষ্টে রাখিস ?
.................. ও সোনা বৌ

.......................................................................................................................................................................

আকাশের নীল দেখেছো কখনো মিথিলা?
কতোটা গভীর আর কতোটা কষ্টের…
অনন্ত, কিসের কষ্ট?
ঐ নীলের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভালোবাসতে না পারার কষ্ট…
ভালোবেসে কাঁদতে না পারার কষ্ট, মিথিলা।
না অনন্ত, না…
ঐ নীলের বুকে আদুরে মেঘের ভেসে চলা
আর নীলে ভর করে উড়ে যাওয়া পাখির দল
কি অদ্ভুত সুন্দর তাই না!

আচ্ছা মিথিলা, সমুদ্রের নীল কখনো দেখেছো তুমি?
কেন বলতো অনন্ত?
কতো গভীর সে নীল,
কতো কষ্টের সে বিশালতা…
বিশালতার ভালোবাসায় বাধঁতে না পারার কষ্ট…
ভালোবেসে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে না পারার কষ্ট।
সব তোমার বোঝার ভুল অনন্ত….
ঐ বিশালতাই ধারণ করে জলজ সব আবেগ
সর্ন্তপনে হয়তো প্রেমও…

মিথিলা, দেখো ঐযে লাল গোলাপ
ঐতো, ওখানে সবুজের উপর টকটকে কুড়িঁ
ওর রংটা দেখেছো?
কটকটে লাল আমার একদম ভালো লাগেনা অনন্ত।
ওটা লাল নয় মিথিলা, ওটা আগুন…
বুকের ভিতরে জ্বলে উঠা ভালোবাসার আগুন
রক্তরঙা বারুদ।
কিন্তু, সবুজ-কালচে ঐ কাঁটা
আর হলদে রেণু…
এই দেখো অনন্ত, ভাবলেই গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।

দেখো মিথিলা দেখো…নদীর ওপাশের ঐ কাশবনটা দেখো…
কত শুভ্র আর স্নিগ্ধ
পাশে মেঘের ছায়ায় ভেসে চলা পালের সারি…
অনন্ত, ওটাতো বেদের দল…
বীণের সুরে, টেনে নেয়া বিষ
ফিরিয়ে দিতে পারেনা লক্ষিন্দরের জীবন
তবে কেন এই ভেসে চলা অনন্ত?
ভালোবাসার বিষ কুড়ে কুড়ে খায় জীবনকে,
জীবনের স্বপ্নকে
তবে কেন সেই ভালোবাসাকে আহ্বান?
বলতে পারো অনন্ত?

আমি কিছু জানিনা, জানতে চাইও না
শুধু বলি ভালোবাসা দাও…
উষ্ষনতার ছোঁয়া বোলাও আমার ওষ্ঠে
বিনিময়ে শুষে নেবো তোমার লোনা জল
এনে দেবো স্বপ্নের রং
আর একটি, শুধূ একটি বার বলবো…
ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি মিথিলা
শেষ প্রশ্বাসের সাথে…