সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সফেদা ফলের রাজকীয় গুনাগুন




দেশী ফলের কথা বললে আমাদের মনে অনেক ফলের নামই আসবে। তবে বেশ পরিচিত একটি ফল ঠিকই অবহেলিত র‍য়ে যাবে। বলছিলাম সফেদার কথা। 

আমাদের দেশে বেশ পরিচিত একটি দেশি ফল হলো সফেদা। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ অনেক গুনসম্পন্ন এই ফলটি খানিকটা অবহেলিত হলেও হরহামেশাই হাতের নাগালে পাওয়া যায়। শুধু মাত্র স্বাদের কারণেই ছোট-বড় প্রায় সবার কাছেই প্রিয় ফল সফেদা। কিন্তু জানেন কি, এই ফলটি খেতে যতটা মজার, তার থেকেও বেশি পুষ্টিগুণে ভরপুর! যা আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। 

সফেদার প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে –

ক্যালরি ৮৩ কিলোক্যালরি

শর্করা ১৯.৯৬ গ্রাম

আমিষ ০.৪৪ গ্রাম

ভিটামিন বি২ ০.০২ মিলিগ্রাম

ভিটামিন বি৩ ০.২ মিলিগ্রাম

ভিটামিন বি৫ ০.২৫২ মিলিগ্রাম

ভিটামিন বি৬ ০.০৩৭ মিলিগ্রাম

ফলেট ১৪ আইইউ

ভিটামিন সি ১৪.৭ মিলিগ্রাম

ক্যালসিয়াম ২১ মিলিগ্রাম

আয়রন ০.৮ মিলিগ্রাম

ম্যাগনেসিয়াম ১২ মিলিগ্রাম

ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম

পটাশিয়াম ১৯৩ মিলিগ্রাম

সোডিয়াম ১২ মিলিগ্রাম

জিংক ০.১ মিলিগ্রাম

কি কি গুনে গুণান্বিত এই সফেদা এবার চলুন তা জেনে নেয়া যাক:

●সফেদায় আছে ফাইবার, ভিটামিন এ ও সি,প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস, যা হাড়ের গঠন মজবুত করে। ত্বক ও চোখ ভালো রাখে। সফেদা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।

●সফেদায় প্রচুর পরিমাণ পলিফেনলস যৌগ ট্যানিন থাকার কারণে শরীরে প্রদাহ প্রতিরোধ করে এবং জীবাণুর সংক্রমণ ঠেকায়। সফেদা থাকা ট্যানিনের পরিমাণ আঙুর বা ডালিমের মতোই।

● সফেদাতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ব্লাড ভেসেল সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

●সফেদায় থাকা পটাসিয়াম সেলুলার ফাংশন, স্নায়ু আবেগ নিয়ন্ত্রণ, অবসন্নতা, ও স্মৃতিশক্তির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

●সফেদাতে থাকা শর্করা এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলো গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী  মায়েদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি দুর্বলতা এবং গর্ভাবস্থার অন্যান্য লক্ষণগুলি যেমন বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরা কমাতে সহায়তা করে।

●সফেদা কফ বসে যাওয়া ও  কাশি উপশম করতে সাহায্য করে,শ্বাসকষ্ট দূর করতে সাহায্য করে এবং ফুসফুস ভালো রাখে।

●সফেদা ওজন কমাতে সাহায্য করে। সফেদা নিয়মিত খেলে স্থুলতা জনিত সমস্যার সমাধান হয়।

●সফেদাতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান প্রদাহজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি গ্যাসট্রিটিস ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। অন্ত্রের ক্যানসার সৃষ্টিকারী ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরিতে বাধা দেয়। 

● এই ফলের বীজগুলি মূত্রবর্ধক হিসাবে কাজ করে, ফলে মূত্রাশয় এবং কিডনিতে পাথরকে বের করে দিতে সহায়তা করে। এটি কিডনিজনিত রোগের বিরুদ্ধেও সুরক্ষা দেয়।

●সফেদায় বিদ্যমান ভিটামিন এ চোখের সুরক্ষায় কাজ করে। রাতকানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

●সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ যা আমাদের শক্তি প্রদান করে।

● সফেদা ডায়রিয়া প্রতিরোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে  সুরক্ষা দেয়।

● সফেদার স্নায়ু শান্ত এবং মানসিক চাপ উপশম করার ক্ষমতা রয়েছে।বিশেষজ্ঞরা  অনিদ্রা , উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিকে এ ফল খেতে বলেন। এতে অনিদ্রা , উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে ধারণা করা হয়।

এছাড়াও এতে থাকা বিভিন্ন এন্টি ভাইরাল উপাদান শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। 

তাই আপনার পরিবারের সদস্যদের সাথে এই ফলটির পরিচয় করিয়ে দিন।  নিয়মিত দেশি ফল সফেদা খান, সুস্থ থাকুন।